সিলেট থেকে সরাসরি হজ্ব ফ্লাইট শুরু হচ্ছে আগামী ১৪ মে। প্রথমদিন ৪১৯ জন যাত্রী নিয়ে বিমানের একটি ফ্লাইট মদিনার উদ্দেশে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে যাবে। গতবারের ন্যায় এবারও সিলেট থেকে মোট ৫টি হজ ফ্লাইট পরিচালিত হবে।
এবছর সিলেটের মোট হজ্ব যাত্রী হচ্ছেন ২ হাজার ৭০০ জন। এরমধ্যে ৫টি ফ্লাইটে সিলেট থেকে সরাসরি ২ হাজার ৯৫ জন যাত্রী হজ্ব যাবেন। আর বাকী ৬০০ জন যাত্রী যাবেন ঢাকা এয়ারপোর্ট হয়ে।বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্সের সিলেট ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার শাহনেওয়াজ মজুমদার এই তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এবারও ‘রোড টু মক্কা’ কর্মসূচির আওতায় ঢাকাতেই দুই দেশের ইমিগ্রেশন হবে যাত্রীদের। তবে, ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে গমনকারী যাত্রীদের সৌদি আরবের আগমনী ইমিগ্রেশন সৌদি আরবেই অনুষ্ঠিত হবে।
বিমান সিলেট অফিস সূত্রে জানা গেছে, সিলেট অঞ্চলের হজযাত্রীদের দুর্ভোগের বিষয়টি মাথায় রেখে এবার সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ৫টি হজ ফ্লাইট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ৫টি ফ্লাইটে ৪১৯ জন করে মোট ২ হাজার ৯৫ জন হজযাত্রী পরিবহন করা হবে। প্রথম দিনের ফ্লাইট ছাড়া বাকি ফ্লাইটগুলো সিলেট-জেদ্দা রুটে পরিচালিত হবে। এই চারটি ফ্লাইটের শিডিউল হচ্ছে ২৩, ২৫, ২৬ ও ২৯ মে।
হজ এজেন্সিস অব বাংলাদেশ (হাব) ও এসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব) সিলেট জোনের নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সিলেট থেকে এবার ২ হাজার ৭ শ জন হজযাত্রী রয়েছেন। বিশেষ করে এবারের হজ কোটা ব্যবস্থাপনায় এজেন্সিপ্রতি এক হাজার হজযাত্রী বেঁধে দেওয়ায় তারা চরম অস্বস্তির মধ্যে পড়েন। সিলেট অঞ্চলে শতাধিক এজেন্সি কাজ করলেও ১৫-২০টি এজেন্সি মাঠে ছিল সক্রিয়। পরে তারা সম্মিলিতভাবে তিনটি লিড এজেন্সির মাধ্যমে সিলেটের হজযাত্রীদের নিবন্ধনসহ যাবতীয় কার্যক্রম সম্পাদন করেন। বড় এই তিনটি এজেন্সি হচ্ছে লতিফ ট্রাভেলস প্রাইভেট লিমিটেড, এলাইট ট্রাভেলস ও আল ইহসান ট্রাভেলস।
সংশ্লিষ্টরা জানান, তিনটি লিড এজেন্সি ছাড়াও যে সকল এজেন্সি হজযাত্রী সংগ্রহে সমন্বয়ক এজেন্সি হিসেবে কাজ করেছে তাদের মধ্যে রয়েছে ইকরা ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস, সিপার এয়ার সার্ভিস, আল মনসুর এয়ার সার্ভিস, সোমা ইন্টারন্যাশনাল সার্ভিসেস, আকাবা ট্রেডিং কর্পোরেশন, রাব্বানী এভিয়েশন সার্ভিসেস, আবাবিল এয়ার সার্ভিস, ট্রাভেলন এয়ার সার্ভিসেস, আল শরিফাইন ট্রাভেলস, নিবরাস ট্রাভেলস, তাশফিক ট্রাভেলস, সিটি ওভারসীজ, যাত্রীক ট্রাভেলস, আলফা ট্রাভেলস, খাজা ট্রাভেলস, সানসাইন ট্রাভেলস, আকাবা ট্রাভেলস ও ইশরা ট্রাভেলস ইত্যাদি।
হজ এজেন্সিস অব বাংলাদেশ (হাব) সিলেট জোনের সেক্রেটারী আব্দুল কাদির বলেন, আগে একটি এজেন্সি সর্বোচ্চ ৩০০ এবং সর্বনিম্ন ১৫০ জন হজ¦ যাত্রী পাঠাতে পারতো। এবার এটি করা হয়েছে ১০০০ জন। ফলে অনেক এজেন্সীর জন্য বিষয়টি কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুনেছি আগামী বছর এই সংখ্যা ২০০০ করা হতে পারে। তবে এ নিয়ে কিছুটা প্রতিবন্ধকতা হলে শঙ্কার কিছু নেই। নিয়মটা যেহেতু সৌদী সরকারের সে ব্যাপারে আমাদের সরকারেরও তেমন কিছু করার নেই। এবছরের মতো ভবিষ্যতে কয়েকটি এজেন্সী মিলে হজ যাত্রীর কোটা পূরণ করতে পারবে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন সিলেটের হিসাবরক্ষক সৈয়দ ফখরুল ইসলাম জানিয়েছেন সিলেট থেকে সরকারিভাবে হজযাত্রী নিবন্ধনকারী হচ্ছেন ৩৩ জন। এফবিসিসিআই-এর সাবেক পরিচালক ও সিপার এয়ার সার্ভিসের স্বত্বাধিকারী খন্দকার সিপার আহমদ এবারের হজ কোটা ব্যবস্থাপনায় এজেন্সিপ্রতি এক হাজার হজযাত্রী বেঁধে দেওয়ার বিষয়টিকে দুঃখজনক বলে আখ্যায়িত করেন। এ ধরনের কোটা আর কোন দেশের সাথে নেই। সৌদি আরবের ধর্মমন্ত্রণালয়কে এ ব্যাপারে সংবেদনশীল হওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার রাতে ঢাকা থেকে এ বছরের হজ ফ্লাইট শুরু হয়েছে। চলবে ৩১ মে পর্যন্ত। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, হজযাত্রীদের মধ্যে সরকারি মাধ্যমে ৫ হাজার ২০০ জন এবং বেসরকারি মাধ্যমে ৮১ হাজার ৯০০ জন্য এবার হজে যাবেন। হজযাত্রী পরিবহনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স হজের আগে ১১৮টি এবং হজের পরে ১০৯টি ফ্লাইট পরিচালনা করবে। হাজিদের নিয়ে প্রথম ফিরতি ফ্লাইট আসবে ১০ জুন এবং শেষ ফিরতি ফ্লাইট আসবে ১০ জুলাই।