• Tue, ১৮ Mar ২০২৫, ১১:৫২ অপরাহ্ন
  • [gtranslate]

সিলেটে ভালোবাসায় সিক্ত হামজা

স্টাফ রিপোর্টার
আপডেট : সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫

ফুটবলপ্রেমীদের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে সিলেটে পৌঁছেছেন হামজা চৌধুরী। ইংলিশ ফুটবলের এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার সোমবার পৌনে ১২টার দিকে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পা রাখেন। তাকে বরণ করে নিতে সকাল থেকেই উৎসবের আবহ বিরাজ করছিল। হামজা চৌধুরীর বাবা দেওয়ান মোরশেদ চৌধুরী বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন।সোমবার বাংলাদেশ সময় রাত ২টায় বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে ম্যানচেস্টার থেকে সিলেটের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন হামজা।

সোমবার সকাল ১০টা থেকেই তাকে বরণ করতে সিলেটের ভক্তরা ফুল-ব্যানার-ঢাক-ঢোল নিয়ে হাজির হন বিমানবন্দরে। তাদের হাতে হামজার আঁকা ছবি আর ব্যানার-ফ্যাস্টুন দেখা গেছে। এ সময় বাধ্যযন্ত্রের তালে আর স্লোগানে-স্লোগানে মুখরিত হয় পুরো বিমানবন্দর এলাকা। সিলেটে পৌঁছেই ভক্তদের বিপুল ভালোবাসায় সিক্ত হন হামজা চৌধুরী।

ভক্তদের এই ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয় নিরাপত্তাবাহিনীকে। সাংবাদকর্মীদের ভিড়ও ছিল উপচে পড়া। বেলা ১টার দিকে বিমানবন্দরের ভিআইপি গেট দিয়ে যখন হামজা চৌধুরী বাইরে বেরিয়ে আসেন তখন রীতিমত ধাক্কাধাক্কি লেগে যায়। ফলে সাংবাদিকদের সঙ্গে তেমন কথা বলতে পারেনি ফুটবল তারকা।

এর মধ্যেই বিমানবন্দরে অবতরণের পর হামজাকে নিয়ে আসা হয় গণমাধ্যমের সামনে। ‘হামজা, হামজা’ স্লোগান এবং ভিড়ের সামনে তাঁকে বেশ হাসিখুশিই দেখা গেছে। তবে কোলাহলের কারণে প্রশ্নোত্তর পর্ব শুরু করতে সময় লেগেছে। দেশে ফেরা এবং মানুষের ভিড় নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে হামজা বলেন, ‘অ্যামেইজিং, অ্যামেইজিং’। সঙ্গে ইংরেজিতে যোগ করেন, ‘অনেক দিন পর ফিরলাম। আমি রোমাঞ্চিত’।

আগামী মঙ্গলবার এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে প্রথমে হট্টগোলের কারণে বুঝতেই পারেননি হামজা। নিজেই পাল্টা জিজ্ঞাসা করেন, আমি বুঝছি না, বুঝছি না।, এরপর আবার বুঝিয়ে বললে হামজা বলেন, ‘ইনশা আল্লাহ আমরা উইন খরমু। আমার বড় স্বপ্ন আছে। কোচ হাভিয়েরের সঙ্গে কাজ করব। ইনশা আল্লাহ আমরা উইন করিয়া প্রোগ্রেস করতে পারমু।এরপর আরও প্রশ্নের উত্তর দিতে চেয়েছিলেন হামজা। তবে বাফুফে কর্মকর্তারা তাঁকে সরিয়ে নিয়ে যান। সিলেট বিমানবন্দর থেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে হবিগঞ্জের দিকে রওনা দেন হামজা।

হামজাকে বরণ করতে সিলেট নগরীর আম্বরখানা থেকে আসা যুবক মারজান হোসেন বলেন, সিলেটের হামজা ইংলিশ লীগ মাতানো ফুটবলার। তিনি এখন বাংলাদেশের হয়ে খেলবেন এটা আমাদের জন্য আনন্দের। তিনি আমাদের সিলেটি। এটি আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। তাই তাকে দেখতে খোনে এসেছি। সকাল থেকে বিমানবন্দরে রয়েছি। তার মতো আরো অসংখ্য নাম না জানা ফুটবলপ্রেমী হাজির হন বিমানবন্দরে।

হামজা ও তার পরিবারকে বরণ করে নিতে সিলেট বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন বাফুফের নির্বাহী সদস্য সাখাওয়াত হোসেন ভুইয়া শাহীন, কামরুল ইসলাম হিল্টন, গোলাম গাউস, ইকবাল হোসেন, সত্যজিৎ দাশ রুপু, ইমতিয়াজ হামিদ সবুজ ও মন্জুরুল করিম। তাদের সঙ্গে ছিলেন হামজার বাবা মোরশেদ দেওয়ান চৌধুরী ও সিলেটের ফুটবলপ্রেমীরা।হামজার বাবা মোরশেদ দেওয়ান চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, সিলেট বিমানবন্দর থেকে সরাসরি হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার স্নানঘাট গ্রামে চলে যাবে হামজা। সেখানে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাবে।আগামী ২৫ মার্চ ভারতের বিপক্ষে বর্তমানে শেফিল্ড ইউনাইটেডের এই মিডফিল্ডারের অভিষেক হওয়ার কথা রয়েছে।

হামজা চৌধুরী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক। তবে এখন তিনি বাংলাদেশেরও নাগরিক। তাকে নাগরিকত্ব দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।ছোট বেলা থেকেই বাংলাদেশের প্রতি অন্যরকম টান ছিল হামজার। ছেলেকে দেশের জার্সিতে খেলতে অনুপ্রাণিত করেছিলেন বাবা। তার স্বপ্ন পূরণ এখন স্রেফ সময়ের ব্যাপার। অনাকাঙিক্ষত কিছু না ঘটলে আগামী ২৫ মার্চ ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের হয়ে খেলতে নামবেন হামজা।

মা-বাবার সাথে গ্রামে এর আগেও হামজা এসেছেন কয়েকবার। এবার আসছেন প্রায় ১১ বছর পর। তার পরিবার জানিয়েছে, গ্রামের বাড়িতে একদিন থাকবেন হামজা।


বিভাগের আরোও সংবাদ