• Tue, ১৮ Mar ২০২৫, ০১:৪২ পূর্বাহ্ন
  • [gtranslate]

গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের পুনর্বাসন; ট্রাম্পকে ‘না’ বলে দিলো আফ্রিকার ২ দেশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আপডেট : রবিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৫

সোমালিয়া ও এর বিচ্ছিন্ন অঞ্চল সোমালিল্যান্ড গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের পুনর্বাসনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরাইলের কাছ থেকে কোনো প্রস্তাব পায়নি বলে শুক্রবার জানিয়েছেন দেশ দুটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। সোমালিয়া জানিয়েছে, এই ধরনের কোনো পদক্ষেপকে তারা স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।

মার্কিন বার্তাসংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস জানিয়েছে, সুদানের কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। অপরদিকে, সোমালিয়া ও সোমালিল্যান্ডের কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা যোগাযোগের বিষয়ে অবগত নন।

এর আগে, শুক্রবার এপি তাদের এক প্রতিবেদনে মার্কিন ও ইসরাইলি কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, তাদের সরকার সুদান, সোমালিয়া ও সোমালিল্যান্ডের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করেছে যাতে তারা বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনিদের পুনর্বাসনের জন্য তাদের ভূখণ্ড ব্যবহার করার বিষয়ে আলোচনা করতে পারে।

সোমালিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আহমেদ মোয়ালিম ফিকির বলেন, ফিলিস্তিনি জনগণের তাদের পূর্বপুরুষের ভূমিতে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাসের অধিকারকে ক্ষুণ্ন করবে এমন যেকোনো দলের যেকোনো প্রস্তাব বা উদ্যোগ তার দেশ স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করবে।

তিনি রয়টার্সকে বলেন, সোমালিয়ার সরকার এ ধরনের কোনো প্রস্তাব পায়নি। তিনি আরো বলেন, মোগাদিশু সরকার এমন কোনো পরিকল্পনার বিরুদ্ধে যেখানে অন্যান্য জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসনের জন্য সোমালি ভূখণ্ড ব্যবহার করা হবে।

এদিকে, সোমালিল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দিরহমান দাহির আদন রয়টার্সকে বলেছেন, ‘ফিলিস্তিনিদের বিষয়ে কারো সাথে কোনো আলোচনা হয়নি।’

সোমালিয়া ১৭ বছরেরও বেশি সময় ধরে ইসলামপন্থী বিদ্রোহের সাথে লড়াই করছে। এর বিপরীতে সোমালিল্যান্ড ১৯৯১ সালে মোগাদিশু সরকার থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করার পর থেকে বেশিভাগ ক্ষেত্রেই শান্তিতে রয়েছে।

হোয়াইট হাউস ও মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর রয়টার্সের মন্তব্যের অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি। বিধ্বংসী গৃহযুদ্ধের মুখোমুখি দেশ সুদানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও রয়টার্সের মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।

তবে সুদানের একজন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, সুদান এমন কোনো প্রস্তাব পায়নি এবং এটি অগ্রহণযোগ্য হবে।

ট্রাম্পের ‘মধ্যপ্রাচ্য রিভেরা’র বিকল্প হিসেবে আরব নেতারা গাজার জন্য ৫৩ বিলিয়ন ডলারের মিসরীয় পুনর্গঠন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন, যা গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত হওয়া এড়াবে। তিনি ফিলিস্তিনিদের স্থায়ীভাবে বাস্তুচ্যুত করার ও ধ্বংসপ্রাপ্ত গাজা উপত্যকা পুনর্গঠনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দখলের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তার পরিকল্পনাটি ফিলিস্তিনিদের তাদের বাড়িঘর থেকে স্থায়ীভাবে বিতাড়িত হওয়ার দীর্ঘস্থায়ী আশঙ্কাকে আরো জোরদার করে এবং বিশ্বব্যাপী ব্যাপকভাবে প্রত্যাখ্যাত হয়।

এপি রিপোর্ট সম্পর্কে জানতে চাইলে জেনেভায় জাতিসঙ্ঘের মুখপাত্র মিশেল জ্যাকিও বলেন, ‘যেকোনো পরিকল্পনা যা মানুষকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করতে পারে বা করবে অথবা যেকোনো ধরনের জাতিগত নির্মূলের দিকে পরিচালিত করবে, আমরা অবশ্যই এর বিরুদ্ধে থাকব। কারণ এটি আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী।’

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের রাজনৈতিক উপদেষ্টা তাহের আল-নোনো রয়টার্সকে বলেন, গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের আফ্রিকায় পুনর্বাসনের প্রস্তাবটি ‘বোকামি’ এবং ফিলিস্তিনি ও আরব নেতারা তা প্রত্যাখ্যান করেছেন।

তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনিরা তাদের ভূমি ত্যাগ করবে না।’

তবে ইসরাইলি মন্ত্রীরা বলছেন, তারা গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের স্বেচ্ছায় প্রস্থানের সুবিধার্থে উপায়গুলো পরীক্ষা করতে চান এবং তারা জোরপূর্বক বহিষ্কারের কথা বিবেচনা করছেন না।

সূত্র : রয়টার্স


বিভাগের আরোও সংবাদ