নড়াইলের কালিয়ায় আওয়ামী লীগ-বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে হাসিম মোল্যা (৩৫) নামে একজন নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে দুই পুলিশ সদস্যসহ উভয়পক্ষের অন্তত ৮ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
শনিবার (১৫ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কালিয়া উপজেলার হামিদপুর ইউনিয়নের সিলিমপুর গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
নিহত হাসিম মোল্যা উপজেলার হামিদপুর ইউনিয়নের সিলিমপুর গ্রামের আব্দুল কাদের মোল্যার ছেলে ও বিএনপির জনি মোল্যা গ্রুপের একজন কর্মী।
এদিকে এ ঘটনায় ওয়ান শুটারগান ও গুলিসহ দুই ব্যক্তিকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কালিয়া উপজেলার হামিদপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নাহিদ মোল্যার চাচাতো ভাই পার্শ্ববর্তী খুলনা জেলার দিঘলিয়া উপজেলার গাজীরহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা ঠান্ডু মোল্যা গ্রুপের লোকজনের সঙ্গে হামিদপুর ইউনিয়ন বিএনপি নেতা জনি মোল্যা গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল।
এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার (১৪ মার্চ) বিকালে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে বিএনপির নেতা জনি মোল্যা কালিয়া উপজেলার গাজীরহাট বাজার থেকে ঠান্ডু মোল্যা গ্রুপের লোক আব্দুর রউফ মোল্যাকে বের করে দেয়।
এরই জেরে শনিবার (১৫ মার্চ) সকালে উপজেলার হামিদপুর ইউনিয়নের সিলিমপুর গ্রামের ঠান্ডু মোল্যা গ্রুপের লোকজন প্রতিপক্ষ গ্রুপের বিএনপি নেতা জনি মোল্যা ও তার লোকজনের ওপর হামলা করলে উভয় গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এতে হাসিম মোল্যা (৩৫), আব্দুল কাদের মোল্যা (৬০), আশিক (২০), পনি মোল্যা (৩০) ও জনি মোল্যাসহ উভয়পক্ষের অন্তত ৬ জন আহত হন।
এ ঘটনায় জনি মোল্যা গ্রুপের আহত হাসিম মোল্যার খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মৃত্যু হয়।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে পুলিশ সদস্য সজল ও চন্দন আহত হয়। আহতদের কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে নিহতের খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় আবার উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ সময় জনি মোল্যা গ্রুপের লোকজন পালটা হামলার প্রস্তুতিকালে যৌথবাহিনী অভিযান চালিয়ে সিলিমপুর গ্রামের আহমেদ মোল্যার ছেলে সিরাজ মোল্যা (৪৪) ও একই গ্রামের মকবুল শেখের ছেলে আজিজার শেখকে (৫৫) একটি শর্ট গান এবং ১৮ রাউন্ড গুলি ও ২ রাউন্ড এফসিসিসহ আটক করেছে।
কালিয়া থানার ওসি রাশিদুল ইসলাম জানান, দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরেকজনের অবস্থা আশংকাজনক। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে। অস্ত্র উদ্ধারসহ দু’জনকে আটক করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।