• Thu, ২০ Mar ২০২৫, ০৪:১৪ পূর্বাহ্ন
  • [gtranslate]

সরকারি হস্তক্ষেপে কমল বিমান টিকিটের দাম

ডেস্ক রিপোর্ট :
আপডেট : বুধবার, ১৯ মার্চ, ২০২৫

সরকারের হস্তক্ষেপ ও কঠোর নিয়মকানুন বাস্তবায়নের ফলে বিশেষ করে সৌদি আরবের বিভিন্ন গন্তব্যে বিমানের টিকিট ভাড়া কমেছে বলে জানিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব)।

গত ডিসেম্বর ও ফেব্রুয়ারিতে যাত্রীদের ঢাকা থেকে সৌদি আরবের প্রধান শহরগুলোতে যেতে বিমান টিকিটে অতিরিক্ত ভাড়া দিতে বাধ্য করা হয়েছিল। গ্রুপ বুকিং স্কিমের অধীনে টিকিটের দাম এক লাখ ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়ে গিয়েছিল। তবে, সরকারের নজরদারি প্রচেষ্টায় টিকিটের দাম নাটকীয়ভাবে কমেছে। এখন ভাড়া ৪৮ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকায় নেমে এসেছে। এমনকি কিছু বিমান সংস্থা ঢাকা থেকে দাম্মাম ও রিয়াদের মতো রুটে টিকিট ভাড়া কমিয়ে ৩৫ হাজার টাকায় দিচ্ছে।

ক্রমবর্ধমান বিমান ভাড়া রোধকল্পে ও বাজার শৃঙ্খলা আনতে বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয় গত ১১ ফেব্রুয়ারি টিকিট বুকিংয়ে কঠোর নিয়মকানুন জারি করে। জেদ্দা, মদিনা, দাম্মাম ও রিয়াদের মতো গন্তব্যস্থলে যাতায়াতে স্বচ্ছতা উন্নত করা ও কৃত্রিমভাবে স্ফীত মূল্য হ্রাস করার লক্ষ্যে এই নির্দেশিকা জারি করা হয়।নতুন নিয়ম অনুসারে, এখন থেকে অবশ্যই যাত্রীর নাম, পাসপোর্টের বিবরণ ও পাসপোর্টের একটি ফটোকপি দিয়ে বিমানের টিকিট বুকিং করতে হবে।

এ নির্দেশনার পর বিমান সংস্থাগুলো পূর্বে ব্লক করা টিকিট প্রকাশ করেছে। এতে কম্পিউটার রিজার্ভেশন সিস্টেমে আসনের প্রাপ্যতা বৃদ্ধি পেয়েছে। যাত্রী ও ভ্রমণ সংস্থা উভয়ই টিকিট ভাড়া ও আসনের প্রাপ্যতা সম্পর্কে রিয়েল-টাইম তথ্য সেবা পাচ্ছে। এছাড়া বিমান সংস্থাগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা বেড়েছে, যা দাম কমাতে উদ্বুদ্ধ করছে।

মন্ত্রণালয়ের নির্দেশিকা সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বিমান ভাড়া বৃদ্ধির জন্য দায়ী কৃত্রিম আসন ঘাটতির সমস্যাটির সমাধান করেছে। আটাব এক বিবৃতিতে সরকারের হস্তক্ষেপের প্রশংসা করেছে। বিমানে ভ্রমণকারী, বিশেষ করে সাশ্রয়ী মূল্যের বিমানের ওপর নির্ভরশীল অভিবাসী কর্মীদের ওপর আর্থিক বোঝা কমাতে এটিকে সময়োপযোগী ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ বলে অভিহিত করেছে আটাব।

আটাবের মহাসচিব আফসিয়া জান্নাত সালেহ বাসসকে বলেন, এই উদ্যোগ কেবল যাত্রীদের জন্যই নয়, ভ্রমণ শিল্পের জন্যও উপকারী। কারণ, এটি আরও স্বচ্ছ ও প্রতিযোগিতামূলক বাজার নিশ্চিত করবে। এই পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আমরা বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতি কৃতজ্ঞ।

আফসিয়া এ বিষয়ে সরকারি তদারকি অব্যাহত রাখার ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, বিমান সংস্থাগুলোকে আগের চর্চায় ফিরে যাওয়া থেকে বিরত রাখতে হলে কঠোর পর্যবেক্ষণ ও নিয়মকানুন প্রয়োগ অপরিহার্য।

ভবিষ্যতে বাজারের ভারসাম্য বজায় ও ভোক্তাদের স্ফীত মূল্য থেকে রক্ষা করতে অতিরিক্ত আইন ও বিধিমালারও সুপারিশ করা হচ্ছে বলে জানান আটাবের মহাসচিব। তিনি বলেন, সরকারের এই উদ্যোগ যদি সফলভাবে প্রয়োগ করা হয়, তাহলে এটি কেবল বিমান টিকিট শিল্পে স্থায়ী পরিবর্তন আনবে না, বরং বাংলাদেশি যাত্রীরা, বিশেষ করে অভিবাসী কর্মীরা, প্রতিযোগিতামূলক ও সাশ্রয়ী মূল্যের ভ্রমণ থেকে উপকৃত হবে।

বিবৃতিতে আটাব বিমানের টিকিটের মূল্য নির্ধারণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়সংক্রান্ত বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন সচিব বেগম নাসরিন জাহানের ভূমিকার প্রশংসা করেছে। এর আগে চলতি বছর ২৬ জানুয়ারি আটাব এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সরকারকে টিকিটের ক্রমবর্ধমান মূল্য ও বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হস্তক্ষেপের আহ্বান জানায়।


বিভাগের আরোও সংবাদ