সুনামগঞ্জের শাল্লায় পঞ্চম শ্রেণির এক শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি, ধর্ষণচেষ্টার পর সালিশি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে অভিযুক্তকে কোনো শাস্তিও দেওয়া হয়নি। এমনকি ভুক্তভোগীর পরিবারকে বিষয়টি নিয়ে থানা পুলিশে না যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সালিশি বৈঠকে থাকার। এতে করে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে পরিবারটি।
ঘটনাটি উপজেলার হবিবপুর ইউনিয়নের পুটকা গ্রামের।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই প্রত্যন্ত গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে ওই শিশু শিক্ষার্থী। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় একই গ্রামের প্রভাবশালী সুদর্শন দাসের বখাটে ছেলে মানিক লাল দাস (৩০) ওই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। বিষয়টি জানাজানি হলে ঘটনার দিন রাতে ভুক্তভোগীর এক আত্মীয়ের বাড়িতে সালিশি বৈঠকে বসেন গ্রামের তিন পাড়ার কয়েকজন প্রভাবশালী।
বৈঠকে স্থানীয় ইউপি সদস্য দ্বিজেন্দ্র, গ্রাম্য মাতবর রণজিৎ সরকার, বকুল দাস, বিকাশ দাস, সচিন্দ দাস, রানু দাস, কৃষ্ণপদ দাস, রাজ কুমার দাস, সোম চাঁদ দাস, সুনিল দাস, ইন্দ্রজিৎ দাস, সজল দাস, আশিষ দাস কেনু দাসসহ আরও অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে মানিক লাল দাসকে প্রথমে আনা সম্ভব হয়নি। পরে অনেক চেষ্টায় তাকে আনা হলেও তিনি ছিলেন নেশাগ্রস্ত। ভবিষ্যতে এ ধরণের আর কোনো ঘটনা ঘটাবে না মানিক, পরিবারের এমন প্রতিশ্রুতিতে অভিযুক্তকে ক্ষমা করে দেয় মাতবরেরা। একইসঙ্গে ভুক্তভোগী পরিবারকে থানায় অভিযোগ না করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।
সেই বৈঠকে থাকা রণজিৎ সরকার বলেন, ‘সালিশে আমি একা না, ইউপি সদস্য দ্বিজেন্দ্র বাবুসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। গ্রামবাসীকে নিয়ে সালিশে বসার পর অভিযুক্ত মানিককে বৈঠকে আনা সম্ভব হয়নি। যখন তাকে আনা হলো তখন সে নেশাগ্রস্ত ছিল।’
বৈঠকে থাকা বিকাশ দাস বলেন, ‘ধর্ষণচেষ্টার বিষয়টি এভাবে ধামাচাপা দেওয়া আদৌ ঠিক হয়নি। গ্রামের অনেক নারী, কিশোরী, শিশু মানিক লাল দাসের ভয়ে শঙ্কিত।’
স্থানীয় স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘এ রকম ঘটনা শুনে মর্মাহত হয়েছি। ভুক্তভোগীকে আইনি সহায়তা দিতে আইনশৃস্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা প্রত্যাশা করি।’
শনিবার ভুক্তভোগীর পরিবার বলে, ‘আমরা আইনি সহায়তা পেতে থানায় অভিযোগ করতে চাইলেও গ্রাম্য সালিশিগণের ভয়ে অভিযোগ করতে পারছি না।’
এ বিষয়ে শাল্লা থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমরা শুনেছি। অভিযুক্তকে আটকে অভিযান চলছে।’